গ্রামের মাঠে ফুটবল খেলার আনন্দই অন্যরকম

আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগ এর সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আশা করছি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সকলে বেশ ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের অনেক অনেক দোয়া এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভালো আছি। আমরা যেন সব সময় সুস্থ সুন্দর এবং ভালো থাকতে পারি সে কারণে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি ফুটবল খেলার আনন্দ নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। ঢাকায় যখন আমার চাকুরী হারিয়ে গেল এরপর প্রায় ৬ মাস পর আমি আমার গ্রামের বাড়িতে গেলাম। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আমি গ্রামের মানুষের সাথে বেশ গ্রাম্য পরিবেশে আবারো চমৎকার দিন উপভোগ করতে থাকলাম।

প্রতিদিন সকালে কাজ করতাম এবং বিকেলে বন্ধুদের সাথে মাঠে ফুটবল খেলতে যেতাম। ফুটবল যদিও আমার প্রিয় খেলা তবে আমি খুব একটা ভালো মানের ফুটবল খেলোয়াড় না। তবে তারপরেও সেনানিবাস থেকে আমাদের জন্য একজন ট্রেনার এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

প্রতিদিন ভদ্রলোক আমাদেরকে খেলাধুলায় শিখাতেন এবং বেশ ভালো লাগতো। যেহেতু আমরা প্রায়ই ১৫ দিন ট্রেনিং করেছি এবং আমাদের ট্রেনিংয়ের রেজাল্ট দেখার জন্য আমাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল ছোট একটি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করার জন্য। কারণ ইতিপূর্বে আমরা বেশ কয়েকদিন ধরেই ট্রেনিং শেষ করেছি এবং আমাদের ফলাফল দেখার জন্য একটি টুর্নামেন্ট খেলা অত্যন্ত জরুরি।

১৭ই আগস্ট আমাদের মাঠে একটি টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে এতদিন ট্রেনিং করার পরেও আমাদের খুব একটা ভালো রেজাল্ট আসেনি কিংবা আমরা নিয়ে আসতে পারিনি। মেসের প্রথম অংশেই আমরা একটি গোল খেয়েছিলাম এবং বিষয়টি আমাদের কাছে অত্যন্ত লজ্জাদায়ক ছিল।

কারণ আমরা ইতিপূর্বেই ট্রেনিং করছি এবং আমাদের একটা ভালো রেজাল্ট আসার কথা ছিল। কিন্তু কেমন জানি এলোমেলো হয়ে গেল আমাদের খেলা।

যাইহোক পরবর্তীতে আমরা আবারো মাঠে নেমেছিলাম এবং আমাদের খেলা শুরু হয়েছিল।

হাফ টাইম শেষ হবার পর আমরা আবারো মাঠে খেলতে নামলাম। যেহেতু গোল পরিবর্তন হয়েছিল এবং আমরা প্রথম অবস্থাতেই একটি গোল খেয়েছিলাম। তবে পরবর্তীতে আমরা একটি গোল দেওয়ার পর রেফারি আমাদের গোল অফসাইড বলেছিল এবং আমরা সকলেই বেশ হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম।

কিন্তু গোল গুটির খেলা কখন কোন দিকে চলে যায় তা বোঝা অত্যন্ত। সুতরাং পরবর্তীতে আমাদের খেলা আমরা একটি ফ্রেম এর ভেতরে বন্দী করেছিলাম এবং আমরা সুন্দরভাবে খেলার পরিকল্পনা করেছিলাম। সকল প্লেয়ার মিলে আমরা দুই মিনিটের একটি পরিকল্পনাতেই আমাদের খেলার ভারসাম্য পরিবর্তন করেছিলাম।

যাই হোক পরবর্তীতে অনেক কষ্টের পর এবং নিজেদের মান-সম্মানের কথা চিন্তা করেছিলাম। কারণ আপনাদেরকে আমি অবগত করতে চাই, ট্রেনিং থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিদিন আমাদের স্কুল মাঠে প্রচুর পরিমাণে মানুষ আসে খেলা দেখতে এবং ট্রেনিং দেখতে। এতকিছু আয়োজন করে যখন আমরা ফুটবল খেলায় হেরে গিয়েছিলাম তখন সত্যি সকলের মুখে অত্যন্ত রাগের ছাপ দেখা দিয়েছিল। বিশেষ করে গ্রামবাসী আমাদের প্রতি অত্যন্ত রাগান্বিত হয়েছিল।

যাইহোক খেলা আর শুধু মাত্র ১৫ মিনিট বাকি রয়েছে। এমন সময় আমরা একটি প্লেয়ার পরিবর্তন করেছিলাম এবং সে একজন কম বয়সী প্লেয়ার।

মিনারুল নামের ওই প্লেয়ার মাঠে নামার পর প্রথম এক মিনিটে একটি গোল করেছিল এবং আমাদের সকল দর্শকের মুখে হাসি ছিল। এরপর প্রত্যেক দর্শক যখন মিনারুলের নামে স্লোগান দিয়েছিল তখন তার অনুপ্রেরণা ও আত্মবিশ্বাস অত গুনে বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং সে অনেক ভালো ফুটবল খেলা আমাদের মাঝে উপহার দিয়েছিল।

যাইহোক খেলা শেষ এখন ফলাফল ঘোষণা করার পালা । আপনারাও নিশ্চয়ই এতক্ষণ বেশ উত্তেজিত এবং আমাদের খেলার ফলাফল জানতে আপনারাও অনেক বেশি আগ্রহ? তবে অবশেষে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা খেলায় বিজয়ী হতে পেরেছিলাম এবং ২-১ গোলে আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম।

যাইহোক অবশেষে নিজেদের মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে এবং সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আমরা খেলায় বিজয়ী হতে সক্ষম হয়েছিলাম। তবে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছি এবং আমাদের প্রতিপক্ষ দল যে খারাপ খেলেছে তা কিন্তু। নানা রকমের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল আমাদেরকে এবং তারাও কিন্তু বেশ ভালো একটি খেলা উপহার দিয়েছিল আমাদেরকে।

যাইহোক অবশেষে গ্রামের মাঠে ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করে এবং ফুটবল খেলায় বিজয় হতে পেরে বেশ ভালো লাগ। যাইহোক প্রায় বেশ কিছুদিন পর ফুটবল খেলার এই আনন্দ আপনাদের মাঝে ভাগ করতে পেরে আমারও বেশ ভালো লাগছে। আমি আশাবাদী আপনারাও বেশ উপভোগ করেছেন।

মূল্যবান সময় দিয়ে পড়ার জন্য এবং সুন্দর মন্তব্য ও সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।