লেভেল ০২ ক্লাস লেকচার শিট [# Level 02 Lecture Sheet]

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

ভূমিকা

যেহেতু আপনারা এখানে দীর্ঘমেয়াদে কাজ করবেন তাই আপনাদের ওয়ালেট কিভাবে নিরাপদ থাকবে সেই বিষয়টি আপনাদের জন্য অবশ্যই জরুরি। তাই লেভেল ২ এর ক্লাসগুলো সবার জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শিয়াল পন্ডিতের পাঠশালা-য় লেভেল টু-তে স্টিমিট অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পাঠদান করা হয়। প্রথমে লেভেল টু এর বিষয়বস্তু গুলো জেনে নেয়া যাক।

  • কী নিরাপত্তা (Key Security)
  • ডেলিগেশন (Delegation)
  • পাওয়ার আপ (Power Up)
  • ওয়ালেট নিয়ন্ত্রন (Controlling of Wallet)
    Thumbnails.jpg



কী নিরাপত্তা (Key Security)

নিরাপত্তা বিষয়ে সাধারণ আলোচনাঃ

যদি আপনি অনেক ভালো কাজ করেন এবং অনেক বেশি পরিমাণ রিওয়ার্ড অর্জন করেন কিন্তু সেটা নিরাপত্তার কারণে অন্য কেউ হ্যাক করে বা চুরি করে নিয়ে যায় তাহলে কিন্তু আপনার সবকিছুই হারিয়ে যাবে এবং আপনি হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়বেন কারণ আপনার দীর্ঘদিনের পরিশ্রম বৃথা হয়ে যাবে। তাই আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বন্ধে খুঁটিনাটি বিষয়গুলো জেনে নিন তারপরে আপনার ওয়ালেট কে নিরাপদ করুন।

এখানে ব্লকচেইন টেকনোলজি হওয়াতে এবং ব্যাপারটা ডিসেন্ত্রালাইজ করে দেয়ার কারণে কোন কেন্দ্রীয় অথরিটি নেই যার কাছে আপনি অ্যাকাউন্টের মালিকানা কিংবা আপনার ওয়ালেট এর দাবী জানাবেন। তাই এক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, না জেনেবুঝে সামান্য ভুলে আপনার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।


একাউন্ট-এর কীঃ (Key)

আমরা যখন স্টিমিটে একাউন্ট করি তখন একটা পাসওয়ার্ড (একটু বড় সংখ্যা) জেনারেট হয় যেটিকে মাস্টার পাসওয়ার্ড বলা হয়। কিন্তু এর বাইরেও আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের কী দেয়া হয় বিভিন্ন রকম কাজ সম্পাদনের জন্য।

কী-কে আমরা প্রথমে দুইভাগে ভাগ করতে পারি।

  • পাবলিক কী ও
  • প্রাইভেট কী

এগুলো আবার চার ধরনের

  • পোস্টিং কী (Posting Key)
  • অ্যাক্টিভ কী (Active Key)
  • উনার কী (Owner Key)
  • মেমো কী (Memo Key)

পাবলিক কীঃ

পাবলিক কী আসলে উন্মুক্ত কী যা আপনার জন্য সংরক্ষণ করার কোন দরকার নেই। ব্লকচেইনের ডাটা এনক্রিপ্ট করে দেখতে চাইলে এই কী প্রয়োজন হতে পারে। এই কী সবার জন্য উন্মুক্ত। আপনার পাবলিক কী আপনি স্টিম স্ক্যান (https://steemscan.com/) এ গিয়ে দেখে নিতে পারবেন।


প্রাইভেট কীঃ

প্রাইভেট কী আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাইভেট কী গুলোকে বিভিন্নভাবে লেয়ারিং করা হয়েছে। অর্থাৎ একেকটা কী এর কার্যক্রম একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ করা হয়েছে যাতে করে যে সকল কাজের জন্য যে কী দরকার সেই কী ব্যবহার করা যায়।


পোস্টিং কীঃ

এই কী আপনার কেবলমাত্র সোশ্যাল একটিভিটির জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি পোস্ট, কমেন্ট, ভোট দেওয়ার মত কাজগুলো এই কী দিয়ে করতে পারবেন। এর বাইরে কোন কাজ এই কী দিয়ে করা সম্ভব হবে না। যেহেতু ওয়ালেট এর কাজগুলো এই কী দিয়ে করা সম্ভব হচ্ছে কী-গুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম সেনসিটিভ কী। অর্থাৎ আপনি যে কোন ওয়েব সাইটে এই কী ব্যবহার করতে খুব বেশি দ্বিধা না করলেও হবে কারণ এই কী দিয়ে কেউ হয়তো আপনার একাউন্ট থেকে ভোট দিতে পারবে, কমেন্ট করতে পারবে কিন্তু আপনার ওয়ালেট সংক্রান্ত কাজগুলো করতে পারবে না।

অর্থাৎ আপনি যখন সোশ্যাল একটিভিটি করবেন তখন আপনি এই কী ব্যবহার করবেন এবং এই কী শুধুমাত্র সোশ্যাল একটিভিটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ তারপরও এক পলক দেখে নেয়া যাক আপনি এই কী দিয়ে কি কি কাজ করতে পারছেনঃ

  • পোস্ট ও কমেন্ট করা
  • পোস্ট ও কমেন্ট এডিট করা
  • আপভোট ও ডাউনভোট দেয়া
  • কোন পোস্ট রিস্টিম (Resteem) করা
  • কাউকে ফলো ও আনফলো করা
  • কোন অনাকাঙ্ক্ষিত একাউন্ট মিউট করা



অ্যাক্টিভ কীঃ

এই কী দিয়ে আপনি আপনার আর্থিক কাজগুলো করতে পারবেন অর্থাৎ আপনি যদি কোনো লেনদেন করতে চান তাহলে এই কী আপনার অবশ্যই প্রয়োজন হবে। তাই বুঝতেই পারছেন এই কী সেনসিটিভ একটি বিষয়। কোন ট্রাস্টেড ওয়েবসাইট ছাড়া যেকোনো জায়গায় এই কী ব্যবহার করা থেকে সবসময় বিরত থাকবেন কারণ কেউ যদি আপনার এই অ্যাক্টিভ কী পেয়ে যায় তাহলে তার পক্ষে মুহুর্তেই আপনার ওয়ালেট কে খালি করে দেওয়া সম্ভব। যদি আপনার ওয়ালেট এ লিকুইড কোন steem ও SBD থেকে থাকে তাহলে সেটাকে মুহূর্তেই এই কী থাকলে ট্রান্সফার করে নেয়া যাবে। পাওয়ার আপ করা থাকলে যেহেতু পাওয়ার ডাউন দিতে সময় লাগে (চার সপ্তাহ) সেক্ষেত্রে কেউ যদি আপনার কী ব্যবহার করে পাওয়ার ডাউন দিয়েও দেয় তাহলে আপনি দেখতে পারবেন এবং একাউন্ট রেকভারি ও পাসোয়ার্ড পরিবর্তনের সময় পাবেন। লিকুইডগুলো আপনি মুহুর্তেই হারাবেন। একবার দেখে নেয়া যাক এই কী দিয়ে আপনি কি কি কাজ করতে পারছেনঃ

  • ট্রান্সফারের কাজ।
  • পাওয়ার আপ ও পাওয়ার ডাউন।
  • SBD Steem কনভার্সন
  • উইটনেস ভোট দেয়া
  • কোন এক্সচেঞ্জে ক্রয় বিক্রয় অর্ডার দেয়া
  • প্রোফাইলের কিছু তথ্য পরিবর্তন
  • নতুন ব্যবহারকারী তৈরি করা ইত্যাদি।



উনার কীঃ

নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এটি একধরনের মালিকানা সংক্রান্ত কী অর্থাৎ এখানে ব্লকচেইনে আপনি যদি আপনার মালিকানা প্রমাণ করতে চান তাহলে এই কী আপনার দরকার হবে। যদি আপনার কী হারিয়ে যায় বা অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয় তাহলে আপনার পক্ষে আপনার একটি কী রিকভার করা বা একাউন্ট রিকভার করার ক্ষেত্রে এই কী আপনাকে সহযোগিতা করবে। এই কী যার কাছে থাকবে সেই কীন্তু একাউন্ট এর মালিকানা দাবি করতে পারবে। তাই অন্যান্য কী রিকভারির ক্ষেত্রে এই কী যেহেতু জরুরি তাই এই কী অবশ্যই অনেক বেশী সেনসিটিভ এবং এটিকে আপনার উচিত আলাদা জায়গায় অনেক যত্ন করে লিখে রাখা বা অনেক ভালভাবে ব্যাকআপ নিয়ে রাখা।

এতে করে আপনার একটিভ কী হারিয়ে গেলেও আপনি সেটাকে পুনরুদ্ধার করে কাজ করতে পারবেন। অন্যথায় আপনার পক্ষে আপনারা কী বা একাউন্ট ফিরে পাওয়া সম্ভব হবেনা। তাই মালিকানা দাবি করতে হলে দলিল যেমন প্রয়োজন সেরকমই এই কী আপনার দলিল। এক নজরে দেখে নেয়া যাক এই কী দিয়ে আপনি কি কি করতে পারবেনঃ

  • উনার, এক্টিভ ও পোস্টিং কী রিসেট করতে পারবেন
  • একাউন্ট রিকভার করতে পারবেন
  • ভোটিং অধিকার প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন।



মেমো কীঃ

আপনি যদি কোনো প্রাইভেট মেসেজ পাঠাতে বা পেতে চান এবং যেটাকে কোন একটা সংকেতে পরিবর্তন করে পাঠাতে চান যা পরবর্তীতে দেখতে চান তাহলে এই কী দরকার হবে। এটার ব্যবহার খুব সীমিত পর্যায়ে তাই বিস্তারিত আলোচনার দরকার নেই। সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এই কী সম্বন্ধে খুব বেশি জানাটা জরুরী নয়।

  • এনক্রিপ্ট করা মেসেজ পাঠাতে
  • কোন এনক্রিপ্ট করা মেসেজ দেখতে



বিস্তারিত জানতে Steemit Wallet FAQ সেকশন ঘুরে আসতে পারেন।




মাস্টার পাসওয়ার্ডঃ

মাস্টার পাসওয়ার্ড আপনার অ্যাকাউন্টের সবচেয়ে সেনসিটিভ কী যেটি আপনি একাউন্ট খোলার সময় পেয়ে থাকেন অথবা আপনি নিজে জেনারেট করে থাকেন। আপনার মাস্টার পাসওয়ার্ড কখনোই কাউকে দিবেন না। উপরে আলোচিত সবগুলো কী মূলত তৈরি হয়েছে আপনার মাস্টার পাসওয়ার্ড এর ভিত্তিতে। তাই মাস্টার পাসওয়ার্ড দিয়ে সবগুলো কী এর কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব।

একটা ছোট্ট উদাহরণ দিচ্ছি তাহলে ব্যাপারটা বুঝতে সহজ হবে। দাবা খেলায় দেখতে পাবেন কিস্তি বা নৌকা দিয়ে সোজাসোজি ডানে-বামে যতদূর ইচ্ছা চলাফেরা করা যায় আবার হাতি দিয়ে কোনাকুনি যে কোন দিকে আপনি যত ইচ্ছা চলাফেরা করতে পারেন। কিন্তু মন্ত্রী দিয়ে আপনি সব দিকে যতদূর ইচ্ছা ততদূর আগাতে পারেন।

এখানেও যদি মাস্টার পাসওয়ার্ড এর কথা বলি তাহলে আপনি নৌকা, ঘোড়া, হাতি, সৈন্য ও রাজার কাজও এটা দিয়ে করতে পারবেন অর্থাৎ এই মাস্টার পাসওয়ার্ড আপনার সবগুলো কী এর মাথা। তাই আপনার জন্য সবচেয়ে সেনসিটিভ এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনার মাস্টার পাসওয়ার্ড কে খুব ভালোভাবে সংরক্ষণ করা। আপনার একাউন্ট রিকভার করতে চাইলেও মাস্টার পাসোয়ার্ড লাগবে।

পূর্বে যেগুলো আলোচনা করেছি সেগুলো হচ্ছে কী(key) আর এখন যেটা আলোচনা করলাম সেটা হচ্ছে পাসওয়ার্ড(password) । আপনি বুঝতে পারছেন এই দুইটির মধ্যে একটা পার্থক্য রয়েছে। আগেরগুলো বিভিন্ন লেয়ার এর কী বা চাবি আর এটা পাসোয়ার্ড।




আপনার কী-গুলো কোথায় পাবেনঃ

কী গুলো খুঁজে পাওয়ার জন্য আপনি স্টিমিট-এ চলে যাবেন এবং স্টিমিট থেকে আপনার ওয়ালেটে যাবেন। আর আপনারা জানেন ওয়ালেটে অবশ্যই অ্যাক্টিভ কী দিয়ে লগইন করতে হয়।

যেহেতু উপরে steemit.com দেখতে পাবেন তার মানে হচ্ছে এটা একটা ট্রাস্টেড ওয়েবসাইট এখানে আপনি যেকোন ধরনের কী দিতে পারেন যেগুলো সংরক্ষিত থাকবে না যদিনা আপনার ব্রাউজারে কোন স্পাইওয়্যার বা ম্যালওয়্যার থাকে।

1.png

অ্যাক্টিভ কী দিয়ে লগইন করার পর আপনি যে ইন্টারফেস দেখতে পারবেন তাতে Keys and Permissions ট্যাবে ক্লিক করলেই সেখান থেকে আপনি আপনার কী গুলো একটা একটা করে রিভিল (মানে দেখতে) পারবেন।

2.png

চাইলে একটি পিডিএফ ফাইল নামিয়ে নিতে পারবেন যেখানে আপনার এই সবগুলো কী একসাথে দেয়া থাকবে।

PDF.png






ডেলিগেশন (Delegation)

ডেলিগেশন কিঃ

স্টিমিটে আমরা কাজ করতে গেলে আমাদের জন্য সবচেয়ে প্রভাব বিস্তার করা (ইনফ্লুয়েনশিয়াল) বিষয় হচ্ছে স্টিম পাওয়ার (SP)। অর্থাৎ আমাদের যত স্টিম পাওয়ার থাকবে তত বড় ভোট দিতে পারব আর এতে বেশি পরিমাণে রিওয়ার্ড জেনারেট হবে। কিন্তু কারো কাছে যদি অনেক বেশি স্টিম পাওয়ার থাকে এবং হাতে সময় না থাকে তাহলে চাইলে সে তার পাওয়ার অন্য কাউকে ব্যবহার করার জন্য দিতে পারে। অন্য কাউকে নিজের পাওয়ার ব্যবহার করার জন্য অর্থাৎ ভোট দেওয়ার জন্য দেওয়াকে বলা হয় ডেলিগেশন । অর্থাৎ আপনার যে স্টিম পাওয়ার রয়েছে সেটি আপনি সাময়িক সময়ের জন্য কাউকে ধার দিলেন যাতে করে সে ব্যবহার করতে পারে এবং আপনি চাইলে এটাকে যেকোনো সময় আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন এটাই ডেলিগেশন।


ডেলিগেশন কেনঃ

ডেলিগেশন সার্ভিস যারা গ্রহণ করে বা যারা ডেলিগেট করে তাদের ডেলিগেশনের পিছনে অনেক কারন আছে। এখানে ৪টি কারন দেয়া হল-

প্রথমতঃ

আমাদের যাদের ওয়ালেটে স্টিম পাওয়ার রয়েছে তারা ভোট দিবো এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সব সময় ভালো ভালো পোস্ট খুঁজে ভোট দেয়ার চেষ্টা করব যাতে করে মানুষ ভাল কনটেন্ট(পোস্ট) তৈরি করার ক্ষেত্রে আগ্রহী হয়। আবার এই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের ভ্যালু দিন দিন বৃদ্ধি পাবে তখনই যখন ভাল ভাল কনটেন্ট প্লাটফর্মে যুক্ত হবে কারণ সার্চ ইঞ্জিনে স্টিমিটের কন্টেন্ট অনেক উপরে চলে আসবে যখন এর মধ্যে ভালো ভালো তথ্যবহুল কনটেন্ট থাকবে। তাই ব্লকচেইন এর উন্নতির জন্য ভ্যলু এড করা অর্থাৎ ভালো কনটেন্ট এর গুরুত্ব অপরিসীম। তাই যারা ভাল ভাল কনটেন্ট লিখছে তাদেরকে খুঁজে খুঁজে ভোট দেওয়াটা জরুরি বিষয়।

কিন্তু আপনি একজন ব্যক্তি হিসেবে আপনার পক্ষে অনেক দীর্ঘ সময় নিয়ে ভালো ভালো পোস্ট প্রতিদিন খুঁজে খুঁজে ভোট দেওয়াটা অনেক কষ্টকর একটি ব্যাপার হতে পারে তাই আপনি আপনার পাওয়ারটি এমন কোন সার্ভিসকে ডেলিগেট করতে পারেন যারা সব সময় ভালো ভালো পোস্ট খুঁজে ভোট দিয়ে থাকে। এতে করে আপনার ভাল পোষ্ট খোঁজার সময় বেচে যাবে এবং আপনার পাওয়ার থেকে আপনি যে পরিমাণ রিওয়ার্ড পাওয়ার কথা ছিল সেটাও পেয়ে যাবেন।

যদি আমরা ভালো কোয়ালিটির পোস্ট-এ ভোট না দেই তাহলে যারা সময় দিয়ে ভালো কন্টেন্ট তৈরি করছেন তারা নিরুৎসাহিত হবেন ফলে ভাল পোস্টের অভাবে স্টীমের মান কমে যাবে যেটা ভবিষ্যতে আমাদের সবার জন্যই ক্ষতিকর। কারন স্টিমিট ভাল থাকলে স্টিম এর দাম ভাল থাকবে আর আমরা সবাই ভাল থাকব। তাই ভালো পোস্টে ভোট দেওয়াটা অনেক গুরত্বপূর্ণ।


দ্বিতীয়তঃ

এরকম অনেকেই আছেন যাদের ওয়ালেটে খুব সামান্য পরিমাণ স্টিম পাওয়ার জমা আছে যেমন ২০০/৫০০/৭০০ এরকম। এই পাওয়ার দিয়ে যদি আপনি কোন পোস্টে ভোট দেন তাহলে হয়তোবা ১/২ সেন্ট রিওয়ার্ড আসবে। আর শুধু আপনার ভোট পড়লে আর তা দুই সেন্ট এর কম হলে ডাস্ট হয়ে যাবে যা রিওয়ার্ড পুল এ আসবে না। তাই অল্প অল্প স্টিম পাওয়ার যাদের ওয়ালেটে রয়েছে তাদের জন্য কোন পোস্ট বা কমেন্টে ভোট দিয়ে খুব বেশি রিওয়ার্ড আসবে না। তাই তাদের উচিত কিউরেটর বা ডেলিগেশন সার্ভিস কে অনুসরণ করা যারা কিনা তাদের হয়ে ভোট দিয়ে দিবে এবং লভ্যাংশটা তাদের মাঝে শেয়ার করে দেবে।


তৃতীয়তঃ

সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে ডেলিগেশন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন উপরের উদাহরণে দেখলাম কারো ওয়ালেটে সামান্য পাওয়ার আছে কিন্তু এরকম ১০০ জন যদি একত্রিত হন তাহলে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। যেমন, ধরুন ৫০০ স্টিম পাওয়ার সম্বলিত ১০০ জন এর পাওয়ায়র এক জায়গায় জড়ো করলে ৫০,০০০ স্টিম পাওয়ার হবে যেটা দিয়ে খুব ভালো মানের ভোট দেওয়া যাবে। কিন্তু প্রত্যেকে ৫০০ স্টিম পাওয়ার দিয়ে ভোট দিয়ে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।

তাই বিভিন্ন কমিউনিটিগুলো তাদের ব্যবহারকারীদেরকে সমর্থন দেয়ার জন্য এরকম ডেলিগেশন আহ্বান করে থাকেন যার সমন্বিত রূপ থেকে সবাই সুবিধা পায়। এক্ষেত্রে কিছু কিছু কমিউনিটিতে ডেলিগেশনের জন্য কোন আলাদা করে মুনাফা শেয়ার করা হয় না কেবল ভোট দেয়া হয়। কিছু কিছু ডেলিগেশন সার্ভিস ডেলিগেটরদেরকে আনুপাতিক হারে মুনাফা ডিস্ট্রিবিউট করে দেয় যেমন @heroism@heroism এ ডেলিগেট করলে ও আপনার পোস্ট কোয়ালিটি পোস্ট হলে আপনি একটি ভোট পাবেন আপনার ডেলিগেশন এর আনুপাতিক হারে এবং সপ্তাহ শেষে @heroism এর যা মুনাফা হবে তা লিকুইড স্টিম আকারে সকল ডেলিগেটরদের মাঝে বিতরন করা হবে আনুপাতিক হারে।


চতুর্থতঃ

আপনার কাছে যদি অনেক পরিমান ইনভেস্ট করার মত অর্থ থাকে তাহলে আপনি সেটা দিয়ে স্টিম ক্রয় করে স্টিম পাওয়ার করতে পারেন এবং সেই পাওয়ারটা-কে আপনি ডেলিগেশন সার্ভিসের মাধ্যমে ব্যবহার করে এখানে আয় করতে পারেন। অর্থাৎ আপনার হাতে যদি সময় কম থাকে এবং হাতে অর্থ থাকে তাহলে সেই অর্থকে আপনি এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন সেই বিনিয়োগ থেকে আপনি একটা ভালো রিটার্ন (বাৎসরিক মুনাফা) পেতে পারবেন। কারণ স্টিম পাওয়ার যেসব ডেলিগেশন সার্ভিসে আপনি রাখবেন তারা আপনার ইনভেস্টমেন্ট এর উপর আপনাকে রিওয়ার্ড দিয়ে দিবে। তাই আপনি অন্যান্য প্লাটফর্মে বিনিয়োগের চেয়ে এখানে ব্লকচেইন এবং স্টিম-তে বিনিয়োগকে গুরুত্ব দিয়ে এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন কারণ এখানকার বিনিয়োগ অনেকটাই বেশি লাভজনক অন্যান্য সাধারণ বিনিয়োগের চেয়ে।




কাদেরকে ডেলিগেট করবেনঃ

যেহেতু ভোটিং এর ক্ষেত্রে আগে ভোট দিলে বেশি পরিমাণে রিওয়ার্ড পাওয়া যায় এবং পরে ভোট দিলে কম। তাই ভোটিং একটি আর্ট ও ম্যাথমেটিক্স যার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় হিসাব নিকাশ করে যেই কাজটি করে থাকে ডেলিগেশন সার্ভিস গুলো । তারা লোক নিয়োগ দিয়ে বা বট বানিয়ে এই কাজগুলো করে থাকে তাই অনেক ডেলিগেশন সার্ভিস এর ক্ষেত্রে অনেক বেশি রিটার্ন পাওয়া যায়। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে কম হতে পারে তাই এই বিষয়গুলোকে আপনি নিজে যাচাই বাছাই করে যেটা আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রফিটেবল সেখানেই আপনি আপনার ইনভেস্টমেন্ট ডেলিগেট করবেন। আপনি নিজে থেকে একটু খোঁজাখুঁজি করে নেবেন যে কোন কোন সার্ভিস গুলো ভালো ভালো ভোট দিয়ে থাকে এবং কাদের রিওয়ার্ড এর রিটার্ন ভাল।




আপনি কেন ডেলিগেট করবেনঃ

  • আপনার হাতে যথেস্ট সময় না থাকলে
  • ওয়ালেটে খুব কম স্টিম পাওয়ার থাকলে
  • কোন ভোটিং সার্ভিস বা কিউরেটরের শক্তি বৃদ্ধি করতে চাইলে
  • আপনার স্টিম পাওয়ার এর সর্বোচ্চ পরিমাণ মুনাফা অর্জন করতে চাইলে



আপনি কখন ডেলিগেট করবেন নাঃ

আপনার হাতে যদি সময় থাকে এবং আপনার মোটামুটি একটু ভালো পরিমাণ স্টিম পাওয়ার যেমন ধরুন ২০০০ এর উপরে আছে তাহলে আপনি ডেলিগেশন না করেও নিজে আপনার কাছের যারা মানুষ রয়েছে বন্ধু আত্মীয় কিংবা প্রতিবেশী বা আপনার পরিচিত স্টিমিট ব্যবহারকারীরা যারা খুব ভাল পোস্ট করে যাচ্ছেন তাদেরকে আপনি ভোট দিতে পারেন।

ডেলিগেশন অর্থ এক ধরনের পরের ধনে পোদ্দারি করার মত অর্থাৎ আপনি আপনার পাওয়ার আরেকজনকে দিয়ে দিবেন তিনি আপনার পাওয়ার নিয়ে খেলা করবে। তার এর চেয়ে বরং এটা ভালো যে, আপনি আপনার পাওয়ার নিজের কাছে রাখেন এবং সেটা দিয়ে আপনি আপনার কাছের মানুষ জন বা যাদেরকে চিনেন ভাল পোস্ট করছে তাদেরকে সাপোর্ট দিয়ে যান। এতে করে আপনার সম্পদ অন্যকে দিয়ে ব্যবহৃত হওয়ার অবস্থা থেকে আমি ফিরে আসতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে সময় দিয়ে পোস্ট পড়ে ভাল কন্টেন্ট খুঁজে প্লাগিয়ারিজম চেক করে ভোট দেওয়াটা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

আপনি যদি বড় ইনভেস্টমেন্ট না করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য ডেলিগেশনটা খুব বেশী প্রফিটেবল বা সুইটেবল কোন মাধ্যম নয় তবে আপনি বড় ইনভেস্টর হলে আপনার জন্য ডেলিগেশন সার্ভিস ফলপ্রসূ হতে পারে কারণ আপনি এখান থেকে অনেক ভালো পরিমাণে একটা রিওয়ার্ড বাৎসরিক আয় করতে পারবেন।

সাধারণ ব্যবহারকারীরা যারা অথর রয়েছেন ও কেবল পোস্ট করেন তাদের জন্য কমিউনিটি ডেলিগেশন ছাড়া অন্য ডেলিগেশন ফলপ্রসূ নয় কারণ আপনি যেহেতু অথর তাই আপনার উচিত হবে অন্যদের সাথে খুব এঙ্গেজ থাকা এবং অন্যদের পোস্টে ভোট দেওয়া, কমেন্ট করা তাহলেই অন্যরা আপনার পোস্ট পড়বে ও ভোট দিবে।




কিভাবে আপনি ডেলিগেট করতে পারেনঃ

ডেলিগেশন আপনি অনেক সাইট থেকে অনেকভাবে করতে পারেন। আমি একটি পদ্ধতিতে দেখাচ্ছি।

ধাপ একঃ

প্রথমে https://steemyy.com/ ওয়েবসাইট এ গিয়ে ইউজারনেম দিন। Tools অপশন থেকে Steem SP Delegation Tool নির্বাচন করুন।

1.png




ধাপ দুইঃ

এখানে বেশ কিছু অপশন আছে। এগুলো পূরন করতে হবে। যেমন

  • ডেলিগেটর (যিনি ডেলিগেট করবেন তার ইউজারনেম)
  • ডেলিগেটি (যাকে ডেলিগেট করা হবে তার ইউজারনেম)
  • SP নাকি vest তা নির্বাচন করুন। Vest হিসেবে হয়ত আপনারা বুঝবেন না বা কনভার্ট করতে সমস্যা হতে পারে তাই SP নির্বাচন করুন।
    এবার সাবমিট করার জন্য অনেকগুলো অপশন আছে যেমন কীচেইন, স্টিম লগ-ইন, স্টিম কানেক্ট, এক্টিভ কী দিয়ে সরাসরি ইত্যাদি। আপনি আপনার সুবিধামত যে কোন একটি পদ্ধতি নির্বাচন করতে পারেন। আমি স্টিম লগইন নির্বাচন করছি।

2.png




ধাপ তিনঃ

পরের ধাপে স্টিম লগইন পেজ আসলে সেখান থেকে একবার চেক করে নেওয়া দরকার যে সত্যি steemlogin পেইজ এ আছি কিনা। থাকলে কন্টিনিউ করতে হবে।

3.png




ধাপ চারঃ

এবার আপনার ইউজারনেম ও কী দেয়ার পালা। এক্টিভ কী দিতে হবে যদিও পোস্টিং কী চাইবে।

4.png




কিভাবে আপনি ডেলিগেশন চেক করতে পারেনঃ

ডেলিগেশন চেক করার জন্য আপনি অনেক ওয়েবসাইটে যেতে পারেন। আমি স্টিমওয়ার্ড থেকে দেখাচ্ছি।
প্রথমে https://steemworld.org/ সাইটে গিয়ে আপানার উইজারনেম দিবেন। এরপর ডেলিগেশন বাটনে ক্লিক করবেন। এরপর Outgoing এ গেলে আপনি কাকে কাকে ডেলিগেশন করেছেন সেটা দেখতে পারবেন।
যা আপনি ভেস্টিং (VEST) বা MVest ও SP দুই ফরমেটেই দেখতে পারবেন।

last Delegation Check.png




Delegation 2.png

যেমন আমারটা দেখতে পাচ্ছেন




ডেলিগেশনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ঃ

  • আপনি যদি আপনার ডেলিগেশন বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আগে যতটুকু ডেলিগেট করেছেন সেটির কোন গুরুত্ব নেই অর্থাৎ আপনি বৃদ্ধি করে যতটুকু করতে চান ততটুকু ডেলিগেট করবেন। যেমন উদাহরণস্বরূপঃ আপনি @heroism কে ২০০ স্টিম পাওয়ার ডেলিগেট করে রেখেছেন। এখন আপনি চাচ্ছেন আপনার ডেলিগেশনের পরিমাণটা কিছুটা বাড়াবেন এবং সেজন্য আপনি সর্বমোট ৫০০ স্টিম পাওয়ার ডেলিগেট করতে চাচ্ছেন। এখন আপনি যখন ডেলিগেশনের কমান্ড দিবেন তখন আপনাকে ৫০০ নির্বাচন করতে হবে। অনেকেই এটা ভুল করেন। যেহেতু ৩০০ বাড়িয়ে ৫০০ করা হচ্ছে সেহেতু অনেকে অতিরিক্তটা অর্থাৎ ৩০০ ডেলিগেট করে দেয়। এতে সর্বমোট ৩০০ ডেলিগেট হবে অর্থাৎ আগের দুইশত এর সাথে ১০০ যোগ হবে। আর যদি আপনি ৫০০ ডেলিগেশন কমান্ড দেন তাহলে ৫০০ ই ডেলিগেট হবে। আগের ২০০ তখন আর থাকেনা।

  • আনডেলিগেট করতে চাইলে ০ (শূন্য) ডেলিগেট করলেই আপনার ডেলেগেশন উইথড্র হয়ে যাবে।

  • ডেলিগেশন কার্যকর হয়ে যায় সাথে সাথেই তবে আনডেলিগেট কার্যকর হতে ৪/৫ দিন সময় লাগে অর্থাৎ চার পাঁচ দিন পরে আপনার একাউন্টে আপনার পাওয়ার চলে আসবে। অর্থাৎ সার্ভিসভেদে ডেলিগেশন ইফেক্টিভ হতেও ১/২ বা চার পাঁচ দিন সময় লাগতে পারে।

  • আপনার যে পরিমাণ স্টিম পাওয়ার ডাউন রত অবস্থায় আছে সেগুলোকে আপনি ডেলিগেট করতে পারবেন না। আবার আপনার ডেলিগেট করা এসপিও আপনি পাওয়ার ডাউন দিতে পারবেন না।

  • আপনি যেসব স্টিম ডেলিগেশন হিসেবে পেয়েছেন সেগুলো আবার অন্যকে ডেডিকেট করতে পারবেন না।

  • আপনি চাইলে আপনার ডেলিগেশন যেকোনো সময় তুলে নিতে পারবেন।

  • যতক্ষণ ডেলিগেশন অব্যাহত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত ওই পাওয়ার গুলোর মালিক আসলে ওই ব্যক্তি এবং সে ভোটিং এর জন্য রিওয়ার্ড পাবে, আপনি পাবেন না।






পাওয়ার আপ (Power Up)

এখানে যারা দীর্ঘমেয়াদি কাজ করবেন তাদের জন্য পাওয়ার আপ করাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পাওয়ার আপ বলতে এখানে বুঝানো হচ্ছে স্টিম-কে পাওয়ার আপ করে স্টিম পাওয়ার-এ কনভার্ট করা বা উন্নীত করা। আপনার ওয়ালেটে বেশি স্টিম পাওয়ার (SP) থাকলে ভোট দিয়ে বেশি পরিমাণ কিউরেশন রিওয়ার্ড পাওয়া সম্ভব।

যারা খুব দ্রুত এখানে উন্নতি করতে চান তারা মার্কেট থেকে স্টিম ক্রয় করে পাওয়ার আপ করতে পারেন। আর যারা আস্তে আস্তে নিজেদের অবস্থানকে সমৃদ্ধ করতে চান তারা নিজেদের পোষ্টের মাধ্যমে যা আয় হয় তার থেকে একটা অংশ আস্তে আস্তে পাওয়ার আপ করে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করতে পারেন। আমাদের পরামর্শ বা সুপারিশ থাকবে আপনারা এখান থেকে যতটুকুই আয় করুন না কেন তার অর্ধেকটা তুলে নিজের কাজে ব্যবহার করুন বাকি অর্ধেকটা পাওয়ার আপ করুন তাহলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে গিয়ে আপনার ওয়ালেট এ অনেক ভালো পরিমাণে স্টিম পাওয়ার থাকবে। সেই পাওয়ার দিয়ে আপনি অন্যদেরকে ভোট দিলে লাভবান হতে পারবেন।

আর আপনি চাইলে যেকোন সময় আপনার স্টিম পাওয়ার কে আবার পাওয়ার ডাউন দিয়ে ওলালেটে লিকুইড স্টিম করে নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে চার ভাগে অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে ৪ ভাগের এক ভাগ করে এক মাসে আপনার সম্পূর্ণ পাওয়ার ডাউন হয়ে SP হতে steem এ রূপান্তরিত হয়ে যাবে। তাই পাওয়ার আপ করতে আপনাদের কোন ভয়ের কারণ নেই বরং পাওয়ার আপ এর মাধ্যমে আপনার স্টিমগুলো সুরক্ষিত থাকবে কারণ আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলেও আপনার যে SP সেটাকে কেউ ট্রানস্ফার করতে পারবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত এটাকে পাওয়ার ডাউন দিচ্ছে। আর পাওয়ার ডাউন দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার একাউন্ট হ্যাক হয়েছে বা পাসোয়ার্ড/কী চুরি হয়েছে তখন আপনি এক সপ্তাহের মধ্যে পাসোয়ার্ড পরিবর্তন বা একাউন্ট রিকভারির চেষ্টা করতে পারবেন। কোন যৌক্তিক ও জরুরী কারন ছাড়া পাওয়ার ডাউন-কে আমাদের কমিউনিটি অপছন্দ করে এবং পাওয়ার ডাউন ব্যবহারকারীগণকে সাপোর্ট উপেক্ষা করা হয়।




পাওয়ার আপ কিভাবে করবেনঃ

ওয়ালেটে এক্টিভ কী দিয়ে লগ ইন করলে আপনার ওয়ালেটের অবস্থা দেখতে পারবেন।
1.png




Steem ব্যালেন্স এর পাশে ড্রপ ডাউন ম্যানুতে ক্লিক করলে কিছু অপশন পাবেন যেখানে পাওয়ার আপ বাটন আছে। এতে ক্লিক করুন।
2.png




আমি এমাউন্ট এর ঘরে ৫ লিখে ওকে করলাম।
3.png




নিচে দেখুন স্টিম (steem) ব্যালেন্সে ৫ স্টিম কমে স্টিম পাওয়ার (SP) তে ৫ বেড়ে গেছে।
4.png




ওয়ালেট নিয়ন্ত্রন (Controlling of Wallet)

আপনি কিভাবে আপনার ওয়ালেট নিরাপদ রাখবেন সে ব্যাপারে ১২টি জরুরী পরামর্শঃ

  • এখানে কী গুলোকে আসলে লেয়ারিং করা হয়েছে অর্থাৎ কম গুরুত্বপূর্ণ কী দিয়ে যে কাজ হয়ে যাচ্ছে সেটার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ কী যাতে ব্যবহার করতে না হয় সেজন্য এক একটা নির্দিষ্ট কাজের সীমা পর্যন্ত একটা নির্দিষ্ট কী রাখা হয়েছে। আপনি যখন পোস্টিং সংক্রান্ত কাজ করছেন তখন পোস্টিং কী ব্যবহার করুন। আবার যখন ওয়ালেট সংক্রান্ত কাজ করছেন তখন ওয়ালেট কী ব্যবহার করবেন। অর্থাৎ আপনি যে লেয়ারের কাজ করছেন সেই লেয়ারের সংশ্লিষ্ঠ কী ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি ভালো থাকতে পারবেন। মাস্টার পাসওয়ার্ড কখনো কোন কাজে ব্যবহার করা ঠিক নয়। অবশ্যই মাস্টার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

  • আপনার কি গুলোতে আপনি খুব ভালোভাবে সংরক্ষণ করেন। যদি আপনি কেবলমাত্র আপনার মোবাইল ফোন এবং কম্পিউটারে রেখে দেন তাহলে এগুলো হারিয়ে গেলে আপনার কীগুলোও হারিয়ে যাবে এবং অন্য একজন ব্যক্তির হাতে চলে যাবে। তাই অবশ্যই আপনার বাড়িতে কোন সুরক্ষিত ডায়েরিতে অথবা প্রিন্ট আউট করে রেখে দিবেন যেভাবে আপনি আপনার শিক্ষাজীবনের সার্টিফিকেট রাখেন। আর খেয়াল করবেন সবগুলো পাসওয়ার্ড এক জায়গায় না লিখে রেখে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্নটা (মাস্টার পাসওয়ার্ড) কে অনেক সুরক্ষিত জায়গায় রেখে তারপর উনার, তারপর অ্যাক্টিভ কী এভাবে সুবিধা মত ব্যাকআপ রেখে রেখে সংরক্ষিত করবেন। আপনি সব সময় গুরুত্ব দেবেন মাস্টার পাসওয়ার্ড, উনার কী তে।

  • একাউন্ট খোলার সময় যদি আপনার জিমেইল আইডি এবং পাসওয়ার্ড দেওয়া থাকে এবং টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করা থাকে তাহলে আপনি আপনার পাসওয়ার্ডগুলো গুগল ড্রাইভে আপলোড করে রাখতে পারেন।

  • পাসওয়ার্ড সম্বলিত যে পিডিএফ ফাইলটি জেনারেট হবে সে ফাইলটিকে আপনি এনক্রিপ্ট করে আপনার পেনড্রাইভে রাখতে পারেন সে ক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত ডিক্রিপ্ট করবেন না ততক্ষণ এটি হ্যাক হবেনা বা কারো কাজে লাগবেনা। তাই আপনার কী/পাসোয়ার্ড নিরাপদ থাকবে।

  • কমেন্টে কোন অজানা লিনক দেখলে বা কোন অফার দেয়া থাকলে (সেটা ডিসকর্ডে হোক বা স্টিমিট পোস্টে হোক) সেইসব লিংক এর ধারে কাছেও কখনো যাবেন না তা সে যত ভালো অফার দেয়া হোক না কেন। কখনো ক্লিক করবেন না।

  • কোন সাইটে প্রবেশ করার পরে এড্রেসবারে দেখে নিবেন সেখানে কোন এড্রেসে প্রবেশ করেছেন। যারা আপনার পাসওয়ার্ড চুরি করতে চায় তারা আপনাকে স্টিমিটের ওয়ালেট এর মত একই রকম একটা ইন্টারফেস দেখায় যেটা দেখতে একেবারে স্টিম লগ ইন এর মত। স্টিম লগইন (steemlogin) এ গেলে যেরকম ইন্টারফেস আপনার সামনে আসার কথা ছিল সেই রকম একই ইন্টারফেস তারা বানিয়ে আপনার সামনে দেখাবে এবং আপনার কাছে মনে হবে আপনি স্টিম লগইনকেই পাসওয়ার্ড দিচ্ছেন। তাই আপনি অ্যাড্রেস বার অবশ্যই খেয়াল করে নিবেন যে আপনি যেই সাইটে প্রবেশ করতে চাচ্ছেন সেই সাইটের এ্যাড্রেস কীনা।

  • ব্রাউজারের সেটিংস এ গিয়ে সব সময় আপনি দেখে নেবেন আপনার পাসওয়ার্ড জমা থাকছে কিনা। মাঝে মাঝে ক্যাশ অথবা কুকীজ এগুলো ডিলিট করে দিবেন এবং আবার নতুন করে কাজ শুরু করবেন। বিভিন্ন এক্সটেনশন বা প্লাগিন দিয়ে অনেক সময় পাসোয়ার্ড চুরি করা হয়। তাই কোন ট্রাস্টেড উৎস ছাড়া এক্সটেনশন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। প্রতিদিন একবার ব্রাউজারে কী দিয়ে আপনি স্টিমিটে প্রবেশ করুন তাহলে আপনি হ্যাক হওয়া টের পাবেন।

  • স্টিম-লগইন এবং কীচেইন এই দুটি হচ্ছে ট্রাস্টেড সাইড যেটির মাধ্যমে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারেন। এই সাইট গুলোতে আপনার পাসওয়ার্ড স্টোর থাকে না তাই এখানে আপনি নির্দ্বিধায় আপনার পাসওয়ার্ড বা কী দিতে পারেন। এখানে প্রথমবার আপনাকে শুধুমাত্র কী দিতে হবে এবং পরবর্তীতে আপনি নিজের মতো করে একটা নতুন পাসওয়ার্ড করে সে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে আপনার কাজগুলো চালিয়ে নিতে পারবেন।

  • আপনার রিকোভারি একাউন্টটা ঠিকঠাক আছে কীনা সেটি দেখে নেবেন। রিকভারি চলার সময় অবশ্যই ৩০ দিনের মধ্যে রিকভার করবেন অন্যথায় আপনার জন্য রিকভার করা সম্ভব হবে না। যদি আপনি দেখতে পারেন আপনি কোন পাওয়ার ডাউন দেননি বা কাউকে ট্রানস্ফার করেননি তারপরও আপনার ওয়ালেট থেকে স্টিম চলে যাচ্ছে তাহলে বুঝবেন আপনার পাসওয়ার্ডটি অন্য কেউ ব্যবহার করছে তখন সাথে সাথে রেফারিরর জন্য চেষ্টা করুন এবং পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের চেষ্টা করুন। রিকভারি করার জন্য আগেই বলেছি ওনার কী বা মাস্টার পাসওয়ার্ড লাগবে। এছাড়াও যে জিমেইল (ইমেইল) একাউন্টের মাধ্যমে একাউন্ট খুলেছিলেন সেটি প্রয়োজন হবে।

  • যারা ডিস্কর্ড সার্ভারের মাধ্যামে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি চ্যানেল হতে একাউন্ট করেছেন তারা রেকভারির জন্য দ্রুত অ্যাডমিনের সাথে যোগাযোগ করবেন যদি আপনারা পাসওয়ার্ড পরিবর্তন বা রিকভারি জাতীয় কোনো সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকেন।

  • আপনাকে যিনি একাউন্ট করে দিয়েছে তাকেও আপনি আপনার কী-গুলো দেখাবেন না। যেমনিভাবে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং কার্ডের পিন নাম্বার কিংবা বিকাশের পিন নাম্বার আছে কাউকে দেন না ঠিক তেমনিভাবে আপনার এই কীগুলোও আপনি কাউকে দিবেন না। যিনি আপনাকে সবকিছু শিখিয়ে দিয়েছে তাকেও না।

  • আপনি আপনার ওয়ালেট এ কোন লিকুইড steem বা SBD রাখবেন না বরং সেটাকে পাওয়ার আপ করে রাখবেন । যদি লিকুইড রাখতে চান তাহলে সেভিংস ওয়ালেটে রাখবেন যেখানে থেকে ইউথড্র দিতে তিন দিন লাগবে। কেউ যখন পাওয়ার ডাউন দেবে কিংবা সেভিংস থেকে সরাতে চাইবে তখন আপনি নোটিফিকেশন বা একটিভিটি চেক করে দেখে নিতে পারবেন। তাই আপনার পক্ষে জানা সম্ভব হবে আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড কেউ পেয়ে গেল কিনা।






শেষকথা

অ্যাকাউন্ট নিরাপত্তা সংক্রান্ত এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলে আপনারা খুব ভালোভাবেই আপনাদের অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখতে পারবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার দিনে আমাদেরকে অবশ্যই প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হবে এবং হ্যাকারদের কথা মাথায় রেখে নিজেদের জ্ঞানকে বৃদ্ধি করে নিজেদেরকে নিজেরাই সুরক্ষিত করতে হবে কারণ অনেক হ্যাকাররা আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার জন্য অবশ্যই বসে আছে যদি আপনার ওয়ালেটে অর্থ থাকে। যেহেতু এখানে আর্থিক লেনদেনের ব্যাপার আছে তাই অবশ্যই সব সময় সাবধানে থাকবেন কিন্তু এগুলোর বাইরে অতি সাবধান হওয়ারও দরকার নেই।


এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য

break.png

Sort:  

খুব উপকার হল। এতো সুন্দর করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে বুঝতে কোন অসুবিধা হয় নি। খুব ভালো লাগল সব কিছু পরিক্ষার আগে ভালো করে বুঝে নিতে পারলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ধন্যবাদ দাদা এই সুন্দর পোষ্টের জন্য। আমাদের জন্য এটাই এখন সবথেকে দরকারি পোস্ট। স্টিম কনভার্শন থেকে শুরু করে পাওয়া আপ পর্যন্ত এত পরিষ্কার করে বুঝিয়ে আজকের ক্লাস টাকে তুলে ধরা হয়েছে এই পোস্টটার মাধ্যমে। এই পোস্টটা পড়লে সমস্ত ডাউট ক্লিয়ার হয়ে যাবে।

খুবই চমৎকার অনেক ইম্পর্টেন্ট বিষয়গুলো এখান থেকে শিখতে পারছি । আজকের ক্লাস টি শুনতে আমার একটু অসুবিধা হয়েছিল । পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে ক্লাসের আলোচনার বিষয় গুলোর উপর ধারণা পেয়ে গিয়েছি । অসংখ্য ধন্যবাদ রইল ।

প্রতিটি বিষয়ে খুবই বিস্তারিতভাবে এবং প্র্যাকটিকাল এক্সাম্পল এর মাধ্যমে দেখিয়েছেন ভাইয়া। ক্লাসে বিষয়গুলো খুবই সুন্দর ভাবে আলোচনা করা হয়েছে এবং এই লেকচার শিট এর মাধ্যমে প্রতিটি বিষয় আরো বিস্তারিত ভাবে বুঝতে পারব। ধন্যবাদ ভাইয়া।

খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট। এই পোস্ট পড়ে আমি আজ অনেক কিছু অজানা তথ্য জানতে পেরেছি।ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে যারা @abb-school এর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন।

 3 years ago 

এই পোস্টটু পড়ে আমার অজানা তথ্যগুলো আমি জানতে পারলাম।
ক্লাসে যেসব বিষয় ভালোভাবে বুঝতে পারি নেই। এই পোস্টটি পড়ে সেগুলো বিষয় ভালোভাবে বুঝতে পারলাম।
অসংখ্য ধন্যবাদ,,

 3 years ago 

এবিবি স্কুল প্রতিনিয়ত আমাদের কে খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং ব্লক চেইন সম্পর্কে ধারনা দিয়ে যাচ্ছে।এর জন্য আমরা দাদার কাছে কৃতজ্ঞ এই ব্লক চেইন সম্পর্কে এক সময় কিছুই জানতাম না কিন্তু এখন এবিবু স্কুল এবং আপনাদের সহজোগিতায় অনেক তথ্য খুব সহজ ভাবে জানতে পেরেছি।ধন্যবাদ সবাইকে।

 3 years ago 

এটি একটি চমৎকার শিক্ষনীয় পোষ্ট। অনেক গুলো বিষয় এখানে খুব চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বিশেষ করে একাউন্টের নিরাপত্তা, পাওয়ার আপ, ডেলিগেশনসহ আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে খুব ভালো একটি জ্ঞান অর্জন করলাম। সবার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল 🥀

 3 years ago 

খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যবহুল একটি লেকচার শিট প্রদান করা হয়েছে। সকলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এই লেকচার শিট । পুরাতন এবং নতুন ইউজার সকলেই অনেক উপকৃত হবে এই লেকচার শিটটি পড়ার মাধ্যমে।

খুব সুন্দর ভাবে level-2 বিষয়গুলো আলোচনা করেছেন অনেক কিছু শিখতে পারলাম জানতে পারলাম কোন প্রয়োগ বাকি থাকল। অনেক সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন যা সত্যি নতুন পুরাতন সবার জন্য খুবই ভালো।